সোমবার, ৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৫

বাংলাদেশ থেকে হিন্দুদের ভারত গমন : স্বরূপ সন্ধান : যৌক্তিকতা আর বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে Part - ৯ [ বাংলাদেশ ভারত রিলেটেড প্রবন্ধ # ১৫ ]

উপসংহার :
:
বিতর্ক করতে চাইলে নানাবিধ বিতর্ক করা যায়। মরিসাসের জনসংখ্যার 68.30% যদি ভারতীয় অভিবাসীদের থেকে হতে পারে, আরব আমিরাতের জনসংখ্যার 31.70%, কুয়েতের জনসংখ্যার 21.60%, ত্রিনিদাদ ও টোবাগোর জনসংখ্যার 40.20%, সেন্ট ভিনসেন্টের জনসংখ্যার 19.70%,, গায়েনার জনসংখ্যার 43.50% আর ফিজির মোট জনসংখ্যার 40.10% [340,000 জন] যদি ভারতীয় অভিবাসীদের থেকে হতে পারে, তবে বাংলাভাষিক জনগোষ্ঠী, যাদের পূর্বপুরুষের বসতি হয়তো ওপার্ বাংলায় ছিল। তা ছাড়া ভাষা, কৃষ্টি, সংস্কৃতি, ধর্ম সবই এক হওয়া সত্বেও তারা ওখানে অভিবাসী হতে চাইলে, অপর বাঙালিরা তাদের গ্রহণে এতো ঋণাত্মক ভুমিকা কেন দেখাচ্ছেন? রাজনৈতিক কারণে বিভক্ত হলেও নানা বন্ধন মানুষের থাকতেই পারে। তা কি ছিন্ন হয় কখনো?
:
আমি বলবো রাজনৈতিক বাংলাদেশটি হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, খৃস্টান সবার। মানুষে ঠাসাঠাসি, অভাব আর জমির স্বল্পতাহতেু নানাবিধ সংঘাত সংঘর্ষ ঘটে এখানে, এটা কেবল হিন্দুদের ক্ষেত্রে নয়, মুসলিম গ্রামে, পরিবারেও ঘটে থাকে প্রতিনিয়ত। আমার জন্মের আগে আমার পরিবারের সাথে নানাবিধ সন্ত্রাসি আচরণ করা হয়েছিল, বাবা তা প্রতিরোধ না করতে পেরে কোলকাতা হাইকোর্ট পরে থাকতেন মামলা মোকদ্দমা নিয়ে। কিন্তু বুদ্ধিমতী মা নানা বুক্ধি, যুক্তি আর টেকনিক করে সব সমস্যার সমাধান করে টিকে যান এ দেশেই, প্রতিষ্ঠিত করেন আমাদের সমাজে আর বাংলাদেশে। তিনি পালিয়ে যাননি। 
:
এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশে সকল নাগরিকের উচিত নানাবিধ সমস্যার যৌক্তিক সমাধানের পথ খোঁজা। নিজের স্বার্থ রক্ষার্থে বিদেশে গিয়ে কিছু সত্যের সাথে নানাবিধ মিথ্যার আশ্রয় না নেয়া। আর ধর্মান্ধতা যত ঘুচবে এ সমস্যার সমাধান তত তাড়াতাড়ি হবে। মনে রাখতে হবে সাম্প্রদায়িক সমস্যা, ধর্মান্ধতা, কুংস্কার, ফতোয়াবাজি বাংলাদেশের মত ভারতেও বিদ্যমান। তা সবার সচেতনতায় একদিন বিনাস হবে এ প্রত্যাশা আমার মত অনেকেরই। আমরা সেদিনের প্রত্যাশায় রইলাম। সূর্য সময় একদিন আলোকিত করবে হয়তো দুই বাংলাকেই। অনেক সিরিয়াস কথা হলো হয়তো। চলুন পূর্ণেন্দু পত্রীর একটা কবিতা শুনে এ লেখার ইতি টানি আপাতত -
:
ওগো তুমি বলে দাও --এক মুঠো রোদ
:
আহা! এই পৃথিবীতে উজ্জীবিত কত না সুন্দর
কত না সুন্দর এই পৃথিবীর অথৈ হৃদয়,
সূর্যোদয়ে কত শোভা কত শোভা গোধূলি সন্ধ্যায়
নক্ষত্র ব্যাপ্তির রূপ বিরহী গগনে উন্মুখর।

সুন্দর দেখেছি কত আশ্বিনে এবং অঘ্রাণে
কতদিন হেমন্তের হাওয়ায় হাওয়ায় ওড়া চুলে,
কমিষ্ঠা কন্ঠার চোখে কত দূর জীবনের সুর
সুন্দর দেখেছি কত রৌদ্রমুগ্ধ ফসলের ঘ্রাণে।

কত যে আলোর গানে একদিন দেশের যৌবন,
ফাঁসীর দড়িতে কত বুক পাতে আলোকিত প্রাণ,
শৃঙ্খলে ঝংকার ওঠে- হৃদয়ে কি আকাঙ্গা উদ্দাম
অসি’সার দেহে মনে প্রেমে প্রচন্ড উন্মেষ।


আমি যে সুন্দর ভালোবাসি
সুন্দরের কাছে মুক্তি চাই।
আমার এ মরুভূমি-মন হৃদয়ের প্রচন্ড দাহন
সুন্দরের সুখেই বিলাই।

আমি যে শান্তিকে ভালোবাসি
কোথায় শান্তির পারাবার?
ওগো তুমি বলে দাও তবে এ আঁধারে পথ পাবো কবে
আলোকের উদার ঝংকার।


ওগো তুমি বলে দাও
কোন পথে জাগবে জীবন।
কোন পথে প্রাণের মিছিল মানুষে মানুষে দৃঢ় মিল
জীবনে নতুন স্বপন।

ওগো তুমি বলে দাও কতকাল পরে
আবার পাখির গান ফিরে পাবো আমাদের ঘরে।
আবার হৃদয় মন মুগ্ধ করে জীবন তন্ময়
আবার সন্ধ্যায় ভোরে কথাকাব্য ফিরে পাবো হাসিতে খুশীতে।

সমস্ত ক্ষতের মুখে একরাশ যন্ত্রণা সরিয়ে
সমস্ত দুঃখের দেশে বাঁচবার নিঃশ্বাস ছড়িয়ে
সমস্ত মায়ের মুখে স্নেহময়ী ছবি এঁকে এঁকে
আবার বসন্ত হাওয়া কথা কবে প্রতি ঘরে ঘরে-
জীবন শুকায়ে গেলে করুণাধারায় ভরে ভরে।


ভাঙা চোরা পথে পথে আবার নতুন সব সুর
নতুন উৎসব কিংবা শেষরাত্রে সেতারের দ্রুতস্পন্দ্য মীড়ে
সমস্ত বাংলার মাঠে ঘাটে ঘাটে উঠোনে দাওয়ায় নীড়ে নীড়ে
কচি কচি ঘাসে ঘাসে বধূর ব্যাকুল চোখে মুখে
শক্তিমান পুরুষের বিদ্যুতের মতো চেতনায়
মুক্তির আনন্দ মাতে-শতধারে উচ্ছল বর্ষায়।


ওগো তুমি বলে দাও মরণ শাসানো এই দিনরাত্রি থেকে
পুঞ্জ পুঞ্জ অমাবস্যা থেকে
কবে যে সুন্দর হবো কবে যে উজ্জ্বল হবো
শরতের নীলের মতন।

কবে যে রৌদ্রের মতো শান্তি দিয়ে সাজাবো পৃথিবী
পৃথিবীর বুক জুড়ে মুঠো সুন্দরের গান।
ওগো তুমি বলে দাও কতকাল পরে
দিকে দিকে আমাদের স্বর্ণচ্ছটা জীবন নির্মাণ।



লেখাটি ফেসবুকে দেখতে চাইলে নিচের লিংকে যান প্লিজ


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন