মঙ্গলবার, ৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৫

ছিটমহল সমস্যার সমাধান। দু-দেশের লাখো মানুষের কান্নার কি অবসান হচ্ছে? : ৫ [ ভারত বাংলাদেশ রিলেটেড প্রবন্ধ # ৩৭ ]


সীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়ন করতে হলে ভারতে সংবিধান সংশোধন করতে হবে বিধায় ভারতীয় রাজ ও লোকসভা তা অনুমোদন করলো গতকাল। সীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়ন হলে ছিটমহলের বাসিন্দাদের অবর্ণনীয় দুর্ভোগের অবসান হবে। এতে করে মানবিক সমস্যার সমাধান হবে। সীমান্ত ব্যবস্থাপনা অনেক সহজ হবে। ফলে সন্ত্রাস দমনসহ যে কোনো ধরনের জঙ্গিদের চলাচল রোধে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়াও সহজ হবে।

আসাম বিজেপির পক্ষ থেকে স্থল সীমান্ত চুক্তির তীব্র বিরোধিতা করা হয়। ফলে চুক্তি থেকে আসামের ছিটমহলগুলো বাদ দেয়ার বিষয়টি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বিবেচনা করেছিলেন। এরপর স্থল সীমান্ত চুক্তি থেকে আসামকে বাদ না দিতে মোদিকে চিঠি দিয়ে অনুরোধ করেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈ। আসামকে বাদ দিলে রাজ্যসভায় এ বিল পাসে সমর্থন দেয়া হবে না বলে ইঙ্গিত দেয় প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেস। শেষ পর্যন্ত সোমবার রাতে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহর বাসভবনে এক বৈঠকে আসামকে রেখেই প্রস্তাবটি পাসের জন্য তোলার সিদ্ধান্ত হয়। আসাম বিজেপির সভাপতি সিদ্ধার্থ ভট্টাচার্যসহ দলের সংসদ সদস্যরাও ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
:
ছিটমহল বিনিময়ের পর ভারতের ছিটমহলে বসবাসকারীদের পুনর্বাসনের সব দায়-দায়িত্ব ভারত সরকার বহন করবে। পুনর্বাসনের দায়িত্ব কেন্দ্রীয় সরকারের, রাজ্যের নয়। বাংলাদেশের ভেতরে ভারতীয় ছিটমহল বসবাসকারীদের কেউ যদি ভারতে গিয়ে স্থায়ীভাবে থাকার আগ্রহ প্রকাশ করেন তবে তার পুনর্বাসনের সব দায় কেন্দ্রীয় সরকার বহন করবে। এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি নাগরিকত্ব দেয়াসহ সব দায়িত্ব পালন করবে ভারতের সরকার। ছিটমহলবাসীর নাগরিকত্ব দেয়াসহ পুনর্বাসনে রাজ্য সরকারের কোনো সুপারিশ থাকলে কেন্দ্র তাও বিবেচনা করবে। এসব বিষয়ে প্রশাসনিক পদক্ষেপ নেয়া হবে।
:
এ চুক্তিকে আসাম আর পশ্চিম বাংলার কিছু মানুষ নেতিবাচক দৃষ্টিতে দেখতে থাকেন বিশেষ করে মমতা ব্যানার্জী। কারণ ১৭ হাজার একরের কিছু বেশি জমি বাংলাদেশকে দিয়ে ভারত বাংলাদেশ থেকে পাবে সাত হাজার একরের সামান্য বেশি জমি। তো কে ছাড়তে চায় নিজ প্রায় ১০,০০০ একর জমি?
:
বর্তমান সরকার বিশেষ করে শেখ হাসিনার অব্যাহত প্রচেষ্টায় প্রধান বিরোধিতাকারী মমতা ব্যানার্জি রাজি হন, পরবর্তীতে রাজি হন আসামের বিরোধী পক্ষও। অবশেষে ভারতের সব দলে মোটামুটি একত্র হয়েই বাংলাদেশের পক্ষে দাড়ায় ও চুক্তিটি উভয় কক্ষে পাস করান।
:
আমাদের কৃতজ্ঞতা জানানো উচিত বিলটি পাসের কারণে ভারতীয় জনগণ ও সকল রাজনৈতিক দলের প্রতি। আর নজর দেয়া উচিত জরুরি ভিত্তিতে ঐসব ছিটমহলবাসীর প্রতি, যারা দীর্ঘদিন শিক্ষা, স্বাস্থ্যসহ নানাবিধ অধিকার থেকে বঞ্চিত ছিল। ২০১৫ এর আধুনিক বৈশ্বিক সমাজে ছিল পরাধিন তারা। তাদের জীবন মান উন্নয়নে বাংলাদেশ-ভারত যৌথ পরিকল্পনায় বিশেষ অগ্রাধিকারে নির্মাণ করতে পারে শিক্ষা, স্বাস্থ্য কেন্দ্রসহ নানাবিধ নাগরিক সুবিধা নির্মাণের। আমরা সে প্রত্যাশায় সুসময়ের দিন গুণছি!




{৫-পর্বে মানবিক লেখাটি শেষ হলো, কিছু তথ্য নেট থেকে নেয়া]

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন