মঙ্গলবার, ৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৫

ভারতিয়দের এ "বড়ত্বে”র (বড়াপপান, महानता, श्रेष्ठता, उच्च मानसिकता] জন্যে তাদের শ্রদ্ধা জানাই ! প্রবন্ধ # ২৭



भारतीयों को याद करते हैं !
:
অাতিথেয়তা, আত্মত্যাগ, অন্যের জন্যে নিজের জীবন বিসর্জন এমন বড়ত্বের "কথামালা" হয়তো এক সময়ে বাঙালির মাঝে ছিল। কিন্তু একাত্তরে স্বাধিনতা প্রাপ্তির পর, বিশেষ করে ৭৫-এ বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষের মাঝে ভারতবিদ্বেষি মনোভাব দারুণভাবে সুষ্পষ্ট হয়ে ওঠে। রপ্তানিকারণ দেশ ভারত মধ্যপ্রাচ্যের প্রায় সব দেশগুলোতে ভারতিয় নানাবিধ পণ্য রপ্তানি করলেও, বাংলাদেশের ভারতবিদ্বেষি ব্যাপক মানুষ প্রচারণা চালায় ও মনে করে যে, বাংলাদেশেই সম্ভবত ভারতিয় পণ্যের প্রধান বাজার। যদিও এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অবস্থান ১৪ নম্বরে এবং আমিরাত, সৌদি আরব, কুয়েত প্রভৃতি দেশের অবস্থান ভারতিয় পণ্য আমদানিতে বাংলাদেশের চেয়ে বেশ ওপরে।
:
প্রথমে বাংলাদেশ ভারত ২৫ বছরের মৈত্রি চুক্তিকে এরা গোলামি চুক্তি বলতো। তারপর ভারত অভ্যন্তরে প্রায় ২২৫০ কিলোমিটার বহমান গঙ্গা এবং বাংলাদেশ ভাগে প্রায় ১৭৭ কিমি পদ্মার পানিপ্রবাহ নিয়ে চুক্তিকে সব সময় ঐ গোষ্ঠী বাংলাদেশকে তার ন্যায্য ৫০% পানি না দিয়ে ভারত ঠকাচ্ছে, এমন কথা প্রচার আর শুনতে শুনতে এ কথাটাকে অনেক বাংলাদেশি মানুষ সত্য বলে বিশ্বাসও করছে এখনো। কিন্তু এটা কোনো যুক্তি হতে পারে যে, ২২৫০ কিমি'র জন্য ৫০% পানি, আর ১৭৭ কিমির জন্যও ৫০% পানি? এটা কি হাস্যকর যুক্তি নয় যৌক্তিক মানুষের কাছে?
:
অবশেষে গত ৩১ জুলাই সম্পন্ন হলো ছিটমহল বিনিময়। এ বিনিময়ে বাংলাদেশ পেয়েছে ভারতের থেকে ১১১টা ছিটমহল, যাতে মোট জমির পরিমান ১৭,০০০ একর। আর ভারত পেয়েছে বাংলাদেশ থেকে ৫১টা ছিটমহল, যার মোট জমির পরিমান ৭,৫০০ একর। দেখা যাচ্ছে ১১১ - ৫১ = ৬০টা ছিটমহল এবং ১৭,০০০ - ৭,৫০০ = ৯,৫০০ একর জমি বেশি পেয়েছে বাংলাদেশ। বিপরীতে ভারত বাংলাদেশের চেয়ে ৬০টা ছিটমহল ও ৯,৫০০ একর জমি কম পেয়েছে এ চুক্তিতে।
:
এ কম পাওয়া নিয়ে কিংবা ভারতীয় ৯,৫০০ একর জমি বাংলাদেশকে একটা চুক্তির মাধ্যমে দিয়ে দেয়াতে ভারতিয় নাগরিকদের কোন আন্দোলন, হরতাল, অগ্নিসংযোগ করতে দেখিনি আমরা। দেখিনি ইন্ডিয়ান বিরোধি দলগুলোকে সংসদে বা রাজপথে এ ব্যাপারে কোন নেতিবাচক মন্তব্য করতে। 
:
কিন্তু এটি যদি এমন হতো যে, বাংলাদেশের ৯৫০০ একর ও ৬০টি অতিরিক্ত ছিটমহল ভারতকে এ চুক্তির মাধ্যমে দিয়ে দিলো বাংলাদেশ। তখন যে কি হতো তা একজন সচেতন বাংলাদেশি নাগরিক হিসেবে ভেবে শিউরে উঠি আমি। বিরোধিদল প্রথমেই বলতো, "হাসিনা সরকার গোলামি চুক্তি করে বাংলাদেশের এতো এতো জমি, আর ছিটমহল দিয়ে দিয়েছে ভারতকে, তাই এটা গোলামি চুক্তি। ক্ষমতায় এলে এ চুক্তি বাতিল করে ৯৫০০ একর জমি ফেরত আনবে ভারত থেকে ইত্যাদি ইত্যাদি গালভরা সব কথা। এর প্রতিবাদে দেশে টানা হরতাল থাকতো কয়েক মাস বা কয়েক সপ্তাহ। মানুষ মরতো, গাড়ি পুড়তো, পেট্রোল বোমায় জ্বলতো দেশ। হয়তো লাখো লোকজন নিয়ে সীমান্তে গিয়ে ছিটমহল হস্তান্তরে নানাবিধ বাঁধার সৃষ্টি করতো এদেশের বিরোধি দল। দেশ বিক্রির দালালির অভিযোগ চলতো এ সরকারের বিরুদ্ধে বেশ কবছর টানা।
:
এ ব্যাপারে ভারতিয় সরকারের সাথে সে দেশের রাজনৈতিক দলগুলো ও সাধারণ মানুষ তাদের দেশের অতিরিক্ত ছিটমহল ও জমি দিয়ে বিনিময়ে অতিরিক্ত কিছু দাবি না করে মহত্ব দেখিয়েছে আমাদের প্রতি। তাদের এ বড়ত্বকে (বড়াপপান) শ্রদ্ধা জানাই একজন বাংলাদেশি বাঙালি হিসেবে। জয় বাংলাদেশ আর ভারত্বের বন্ধুত্ব! भारत और नागरिकों के लिए आभारी हूँ। भारत जीत ! बंगाल जीत ! 
:
[ভারতীয় দূতাবাসে হিন্দি শেখার প্রেক্ষিতে ২/৪-টা হিন্দি শব্দ/বাক্য লিখতে পারছি, হাহাহা!]



লেখাটি ফেসবুকে দেখতে চাইলে নিচের লিংকে যান প্লিজ

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন