মঙ্গলবার, ৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৫

ছিটমহল সমস্যার সমাধান। দু-দেশের লাখো মানুষের কান্নার কি অবসান হচ্ছে? : ১ [ ভারত বাংলাদেশ রিলেটেড প্রবন্ধ # ৩৩ ]


ছিটমহল। অনেক পরিচত একটি শব্দ। সপ্তপদি দুখ আর কষ্টের একটি শব্দ। বাংলাদেশ ভারতের হাজারো অধিকারহীন মানুষেরা আমরণ অনশন করেছেন তাঁদের ন্যূন্যতম মানবিক চাহিদা পুরনের তথা মুজিব-ইন্দিরা চুক্তি বাস্তবায়ন সহ ৩ দফা দাবী আদায়ের লক্ষ্যে এই আমরন অনশন। তাঁদের এই যৌক্তিক স্বপ্নের দাবী , যে স্বপ্ন তাঁরা দেখে আসছেন ১৯৪৭ এর পর থেকে , তা যেন এবার পুরন হয় , মানবতা যেন আর ভুলণ্ঠিত না হয়- এ প্রত্যাশা করা উচিৎ আমাদের সবার একজন মানুষ হিসেবে। অবশেষে ভারতেও পাস হলো বিলটি, হয়তো ঐ মানুষগুলোর দুখের অবসান হবে এখন। চলুন দেখি বিষয়টা আসলে কি আর কিভাবে এর শুরু।
:
২০১৫ সনের বৈশ্বিক মানুষের সেকেলে রাজনৈতিক চিন্তন হচ্ছে ছিটমহল। যা কোন দেশের মূল ভৌগলিক সীমানা থেকে বিচ্ছিন্ন এবং অন্য একটি দেশের ভৌগলিক সীমানার অভ্যন্তরে বিরাজমান ভূখণ্ড। ছিটমহল দেশ থেকে বিচ্ছিন্ন এবং ওখানে যেতে হলে অন্য দেশটির জমির উপর দিয়ে যেতে হয়।
:
বাংলাদেশের ভেতর ভারতের রয়েছে ১১১টি ছিটমহল। এগুলোর মধ্যে পঞ্চগড় জেলার সদর, বোদা ও দেবীগঞ্জ থানায় মোট ৩৬টি, নীলফামারী জেলার ডিমলা থানায় ৪টি, লালমনিরহাট জেলার হাতিবান্ধা ও পাটগ্রাম থানায় মোট ৫৯টি এবং কুড়িগ্রাম জেলার ফুলবাড়ী ও ভুরুঙ্গামারী থানায় মোট ১২টি ছিটমহল অবস্থিত। প্রশাসনিক দিক থেকে এগুলি সবই ভারতের কুচবিহার জেলার অন্তর্গত। ভারতের ১১১টি ছিটমহলের মোট ক্ষেত্র ১৭ হাজার ১৫৮ একর এবং মোট জনসংখ্যা প্রায় ১ লক্ষের মত।



ভারতের ভেতর বাংলাদেশের ৫১টি ছিটমহল রয়েছে। এগুলো প্রশাসনিক দিক থেকে লালমনিরহাট জেলার পাটগ্রাম এবং কুড়িগ্রাম জেলার ফুলবাড়ী ও ভুরুঙ্গামারী থানার অন্তর্গত। এদের মধ্যে লালমনিরহাটের আওতায় ৩৩টি ও কুড়িগ্রামের আওতায় রয়েছে ১৮টি ছিটমহল। ভৌগলিক দিক থেকে এদের ৪৭টি পশ্চিমবঙ্গের কুচবিহার জেলার অভ্যন্তরে এবং ৪টি জলপাইগুড়ি জেলার অভ্যন্তরে অবস্থিত। বাংলাদেশের ৫১টি ছিটমহলের মোট ক্ষেত্র ৭ হাজার ১১০ একর এবং মোট জনসংখ্যা প্রায় ৭০ হাজারের মত। বাংলাদেশ ও ভারতের মোট ছিটমহলের আয়তন ২৪ হাজার ২৬৮ একর। বাংলাদেশের ৫১টি ছিট মহলের আয়তন ৭,১১০.০২ একর , জনসংখ্যা প্রায় ৭০,০০০ । ভারতের ১১১ টি ছিট মহলের আয়তন ১৭,১৫৮.০৫ একর , জনসংখ্যা প্রায় ১,০০,০০০ ।
:
বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ভারতের কয়েকটি বড় ছিটমহল রয়েছে যেগুলির ভেতর আবার বাংলাদেশের মালিকানাধীন ছিটমহল আছে। কুড়িগ্রামে ভারতের ছিটমহল দাশিয়ারছড়া। দাশিয়ারছড়ার ভেতরেই আছে চন্দ্রখানা নামের বাংলাদেশের ছিটমহল। তেমনই কুচবিহারেও সম্ভবত বাংলাদেশের এমন ছিটমহল আছে যার ভেতর আবার আছে ভারতের ছিটমহল। অর্থাৎ একদেশের ছিটমহলের ভেতর অন্যদেশের ছিটমহলের অস্তিত্বও রয়েছে। ১৯৪৭ সালে ভারত ভাগের সময় ইংরেজরা এই ছিটমহলগুলিসহ এভাবেই ভারত ও পাকিস্তান সীমানা এঁকে ও জমি বণ্টন করে দিয়ে যায়। কিন্তু তারা কেন এরকমটি করলো তার কারণটি ইতিহাসের দিক থেকে আরও পুরনো। এর অতীত মোগল আমল পর্যন্ত বিস্তৃত।




এর পর জানতে চাইলে দেখুন পর্ব #

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন